শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, আশ্রয়শিবিরের ঘরে বসেই পড়ালেখা রোহিঙ্গা শিশুদের

হাওর বার্তা ডেস্কঃ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, আশ্রয়শিবিরের ঘরে বসেই পড়ালেখা শিখছে রোহিঙ্গা শিশুরা। শিবিরে শিশুদের মানসিক বিকাশের জন্য চালু হয়েছে বাড়িভিত্তিক আরলি চাইল্ডহুড এডুকেশন সেন্টার (ইসিই)। এ প্রকল্পের আওতায় শিবিরের বাড়িগুলোতেই শিক্ষাদান করা হচ্ছে রোহিঙ্গা শিশুদের। এ শিক্ষা কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়েছে ৩ থেকে ৫ বছর বয়সী শিশুদের। তাদের শিক্ষাদান করেন রোহিঙ্গা নারীরাই। এই রোহিঙ্গা শিক্ষিকাদের বলা হয় ‘বিগ মাদার’ অথবা ‘বিগ সিস্টার’।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ভলান্টারি সার্ভিং অর্গানাইজেশন (ভিএসও)–এর সহায়তায় স্থানীয় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ‘মুক্তি কক্সবাজার’ উখিয়ার বিভিন্ন আশ্রয়শিবিরে এমন ৫০টি শিক্ষাকেন্দ্র (ইসিই সেন্টার) চালু করেছে। নির্দিষ্ট দূরত্বে শিবিরের রোহিঙ্গাদের বাড়িতে সেন্টারগুলোর অবস্থান। গত ২০১৮ সালের এপ্রিলে এসব সেন্টার চালু হয়। ৫০টি কেন্দ্রে বর্তমানে শিশুশিক্ষার্থী রয়েছে ১ হাজার ৫০০ জন।

এ ছাড়া ১২টি লার্নিং সেন্টার চালুর মাধ্যমে শিক্ষাদান করা হচ্ছে ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের। এখানে শিক্ষার্থী রয়েছে ১ হাজার ৮০ জন। এসব সেন্টারে একজন রোহিঙ্গা এবং একজন বাংলাদেশি শিক্ষক শিশুদের ইংরেজি, আরবি, গণিত এবং বর্মি ভাষা পড়াচ্ছেন। গত সোমবার সকালে উখিয়ার জামতলী আশ্রয়শিবিরের ই-ব্লকের একটি বাড়িতে (সেন্টারে) গিয়ে দেখা গেছে, শিশুরা খেলার ছলে বেশ আনন্দে-আগ্রহে পড়াশোনা করছে।

শিশুদের পড়াচ্ছে বিগ সিস্টার মরিয়ম বেগম (১৪)। সে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বুচিডংয়ের একটি স্কুলে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইন রাজ্য ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসার পর তার পড়ালেখা বন্ধ।

মরিয়ম বলে, তার এই সেন্টারে প্রতিদিন তিন পালায় শিশুদের পড়ানো হয়। প্রতি পালায় ১০ জন শিশু থাকে। একটি পালা চলে দুই ঘণ্টা। বই ছাড়া খেলনা এবং শারীরিক অভিনয়ের মাধ্যমে শিশুদের পড়ানো হয়। এই কার্যক্রমের ফলে শিশুদের মানসিক বিকাশ ঘটছে। নিজ দেশের ভাষায় শিশুরা পারদর্শী হচ্ছে। মুক্তি কক্সবাজারের প্রধান নির্বাহী বিমল দে সরকার বলেন, রোহিঙ্গা বসতির সেন্টারগুলোতে শিশুরা বেশ আগ্রহ নিয়ে আসে। এর ফলে এসব শিশুদের শারীরিক এবং মানসিক বিকাশ হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email

     এ ক্যাটাগরীর আরো খবর